এই পোষ্টটি মূলত কনজিউমার ড্রোনকে কেন্দ্র করে। DJI mavic mini, mini-2/3, Air 2, Air 2s
আমরা অনেকেই একটু খরচ কমানোর জন্য সেকেন্ড হ্যান্ড ড্রোন কিনে থাকি। কেনার আগে অবশ্যই নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করলে লাভবান হবেন, ইম্পর্টেন্ট ব্যাপারগুলো নিচে একাধিক হ্যাস দিয়ে দেখানো আছে-
# প্রথমেই ড্রোনের সার্বিক অবস্থা জিজ্ঞাসা করে নিন-
১-খোলা হয়েছে কিনা?
২- কতদিন আগে কেনা?
৩- দোকানের রসিদ আছে কিনা বা সেকেন্ড হ্যান্ড নিয়েছে বা বিদেশ থেকে আনিয়েছেন?
৪-ক্র্যাশ করেছে কিনা, করলে কতবার কি কি ক্ষতি হয়েছে?
৫- পানিতে পড়েছে কিনা বা কোনোভাবে পানি ঢুকেছে কিনা?
# দেখা করার পুর্বেই ফোন কল করে তাকে সব ব্যাটারী ও রিমোট ফুল চার্জ দিয়ে নিয়ে আসতে বলবেন।
# কথা বলে দেখা করার স্থান নির্ধারন করুন এমনভাবে যেখানে ফ্রি ভাবে ড্রোনটি উড়াতে পারেন- মাঠ বা বাসার ছাদ। হাতে কমপক্ষে ১-দেড় ঘন্টা নিয়ে যাবেন।
# প্রথমেই বিক্রেতার ফোন এবং সব কিছু কানেক্ট করে ড্রোনটি উড়িয়ে ২ মিটার উপরে আপনার মাথার সমান উচ্চতায় রাখুন। এরপর রিমোটটি হাতে নিয়ে এপটির বিভিন্ন ফাংশন নেড়ে চেড়ে দেখুন।
# খোলা আকাশে উড়ানোর পর চেক করুন জিপিএস কতক্ষণ পর লক হচ্ছে। এটলিস্ট ১০টা জিপিএস পেতে কতক্ষণ সময় লাগছে, সাধারণত ২০ সেকেন্ডের মধ্যে জিপিএস লক হওয়ার কথা, এর বেশি সময় লাগলে বুঝবেন জিপিএস রিসিভার দুর্বল।
# উড়ানোর সময় ড্রোনের ব্যাটারী সাইকেল কত তা চেক করে নিন, DJI FLY app > ডানে উপড়ে তিনটা ডট > Safety এর একদম নিচে স্ক্রল করুন > Battery Info >
#DJI এর ড্রোনগুলো সাধারণত ৩১মিনিট ফ্লাইট টাইম বললেও আসলে ২৫মিনিটের উপরে পাবেন না। তাই ফুল চার্জ ব্যাটারী থাকলেও রিমেইনিং টাইম ২৪-২৫মিনিট দেখাবে, এর থেকে কম ধরুন 99-95% ব্যাটারী লাইফে ২০মিনিট দেখালে বুঝবেন ব্যাটারীটি অনেক ইউজ হয়েছে। এবং এই ফ্লাইট টাইম আরো কমে যাবে।
# এরপর বিভিন্ন দিকে ঘুরাঘুরি করুন Standard speed Mode এ, দেখুন গিম্বল-ক্যামেরা স্মুথলি মুভ করতেছে কিনা। হুট করে ক্যামেরা মাথা ঘুরালে বুঝবেন গিম্বলে সমস্যা আছে, ক্র্যাশ করে আঘাত পেয়েছে। গিম্বলের দাম অনেক বেশি, তাই এই ড্রোন এভয়েড করুন।
## আরো ইম্পর্টেন্ট যেটা চেক করতে হবে যে ড্রোনটি ওয়াটার ড্যামেজড কিনা, ড্রোনের মূল মাদারবোর্ডে ওয়াটার ড্যামেজ ইন্ডিকেটর স্টীকার দেয়া থাকে যেটা সাধারণত সাদা রঙ এর হয় এবং পানিতে ভিজলে লাল রঙ হয়ে যায়। ড্রোন না খুলে এটা সহজে দেখার উপায় নেই। তবে ভালো করে ড্রোনটি অবজার্ভ করলে খোলা হয়েছে কিনা বা ভেতরে ময়লা/ভেজা ভেজা ভাব আছে কিনা তা খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে। পানিতে পড়া ড্রোন অথবা কোনোভাবে ভিজে যাওয়া ড্রোন কোনো অবস্থাতেই নেবেন না, এটা পরে সমস্যা শুরু করবে।
# ব্যাটারী কম্পার্টমেন্ট খুললেই ভেতরে সীল স্টীকার দেখতে পাবেন, তাহলে বুঝবেন খোলা হয়নি। আবার ড্রোনের বডি ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন কোনো স্ক্রুড্রাইভারের দাগ আছে কিনা, তাহলে বুঝবেন খোলা হয়েছে ড্রোনটা।
# ব্যাটারী ভাল করে লক্ষ্য করুন, কোথাও ফুলে গিয়েছে কিনা, ড্রোনে ঢুকানোর পর আটকায় যায় নাকি ইজিভাবে করে ঢোকে এবং বের হয়। কোনোরুপ হাল্কা ফোলা ব্যাটারী গ্রহণ করবেন না, বিপদজনক।
#অন্যান্য খুটিনাটি চেক- ড্রোনে ব্যাটারী লাগিয়ে চার্জিং চেক, রিমোটের চার্জিং চেক, রিমোট রিলিংক করে চেক করবেন রি-লিংক কাজ করছে কিনা ঠিক-ঠাক।
#রেঞ্জ টেস্টঃ ড্রোনটি একটু দূরে নিয়ে যেতে হবে, ৫০০মিটার থেকে ১কিলোমিটার। সাধারণত আমরা এর বেশি দূরে ড্রোন উড়াই না। তাই এইটুকু দেখলেই হবে। ১ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাবেন স্ট্যান্ডার্ড স্পীড মোডে। উচ্চতা ৫০মিটার থেকে ১০০মিটার রাখুন, আরো উপরে উঠানো গেলে ওঠাবেন। এর মধ্যে দেখবেন হুট করে ডিসকানেক্ট হয়ে যায় কিনা, ডিস্কানেক্ট হয়ে আবার কানেক্ট হয় কিনা। এরকম করলে ব্যান্ড সিলেকশনে গিয়ে 2.4Ghz ফিক্সড করে দেবেন, দিয়ে দেখবেন এর পরো ডিস্কানেক্ট হয়ে যাচ্ছে কিনা বা নেটওয়ার্কের খুটি কমে গিয়েছে কিনা। সাধারণত DJI MINI-2 ড্রোন ২কিলোমিটার পর্যন্ত রিমোটের সাথে লাইন-অফ-সাইট মেইনটেইন করলে কোনো খুটি কমবেনা। সো ১ কিলোমিটার দূরত্বে ভিডিও কাটাকাটা বা সিগ্যন্যালের খুটি কমার কথা না। কমলে বুঝবেন কোনো সমস্যা আছে। পরিহার করুন।
.
সম্ভাব্য সমস্যাঃ
# ড্রোন উড়ানোর সময় কিছুক্ষণ পর এপাশ ওপাশ করতে থাকবেন তখন Gimbal Motor Overload এই ওয়ার্নিং আসতে পারে Dji mavic mini সিরিজে। এটা হলে প্রথমেই বুঝবেন ড্রোনটা কমপক্ষে ১বছরের পুরোনো। এটা বিভিন্ন কারণে হয়, প্রথমত গিম্বল প্রটেক্টর লাগিয়ে রাখলে গিম্বল হোল্ডার রাবারগুলো দুর্বল হয়ে ভেতরে চেপে যায়, ফলে ক্যামেরা নড়ানোর সময় ড্রোনের বডিতে গিম্বল বাধা পায়।–চেক করুন আসলেই রাবারগুলো দুর্বল হয়েছে কিনা। যদি তা না হয়ে থাকে তাহলে ভেতরে সমস্যা আছে, আঘাত পেয়েছে। এই ড্রোন কেনা থেকে বিরত থাকুন।
.
অবশ্যই করনীয়ঃ
# ড্রোনটি আগের ওনারের DJI একাউন্টের সাথে বাইন্ড করা আছে কিনা তা চেক করে অবশ্যই আনবাইন্ড করে নেবেন। নাহলে আপনাকে বিক্রির পর ড্রোনটি আগের ওনার লক করে দিতে পারে, তাহলে আপনি আর কোনভাবেই উড়াতে পারবেন না। ড্রোন বডি বা রিমোট অন্য কোনো ডিভাইসের সাথে কাজ করবেনা, আপনাকে তখন ভালো ড্রোনটি ভাংড়ি বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবেনা। তাই সাবধান!